![](https://bangaleerrajniti.com/wp-content/uploads/2023/07/image-3.png)
শফিক ভাই এর থেকে আমার বেশি আপন ছিল তালেয়া আপা ।যেহেতু রাজনীতির আগে আমি ও আমার বড় পরিচয় , আমি একজন সমাজকর্মী এবং সমাজসংস্কারের যাত্রায় তালেয়া আপা বাংলাদেশের অনেক উচ্চমানের ও মনের একজন সহযাত্রী ছিলো আমার। আমার ইউথ গ্রুপ তখন করছিলো নির্বাচন কমিশন এর সাথে ভোটার উদ্বুদ্ধকরের কাজ আর তালেঢা আপার ডেমোক্রেসি ওয়াচ ছিলো এই কার্য্যক্রমের শীর্ষ সংগঠন। একদিন আপা বললো শফিক ভাইয়ের সাথে রাজনৈতিক বিষয়ে বৈঠক করার জন্য কারন ম্যাডাম খালেদা জিয়া দেশের দেশনেত্রী জেল থেকে বেরিয়েই আর কোথাও না গিয়ে শফিক ভাইয়ের বাসায় উঠেছিলো। তাই তখন ওতো হুলুসহুল এর মধ্যে আর দেখা করি নাই- কিন্তু তার ঠিক কিছু দিল পরেই উনার বাসায় গিয়ে হাজির । দীর্ঘক্ষন আলাপচারিতা এবং তখনই বললো তোমরা কয়জন মিলে একদিন বসো- দেখি আমরা কিছু একটা করতে পারি কিনা- যেই কথা সেই কাজ তার ঠিক ২দিন পরেই ডাক দিলো ৩/৪জনকে তার মধ্যে আমি , এড আসাদ ভাই, ক্যাপ্টেন নজরুল (প্রয়াত) সাইফুল ইসলাম ভাই সহ আমরা কজন বসেই ওনার সাথে একমত হলাম যে আমরা শুরু করবো নিয়মিত বৈঠক আর সংগঠনের নাম তিনিই দিলেন (গ্রুপ ২০০৯) (জি-৯) তার পর শুরু হলো পথচলা ॥এবং শফিক ভাই এর ১৫নং বাসা যেনো মাসের ১৫ দিনই যাওয়া আসা আড্ডার আশ্রয়স্থল- যদিও আমাদের অফিসিয়াল বৈঠকের দিন ছিলো প্রতি সপ্তাহের বুধবার- এভাবেই পার হতে থাকলো বছরের পর বছর ।উনার মৃদু হাসি আর অভিভাবক সুলভ কিছু আচরন ভূলবো না কভূ ।২০১৩ সালের ২৭ জুলাই যখন আমি গ্রেফতার হই তিনি চলে যান শাহবাগ থানায়- তারপর সবচেয়ে বেশি স্মৃতিময় সময় ২২ নভেম্বর ২০১৩ সালে যখন এই নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অবৈধ সরকার তাদের গুন্ডা বাহিনী ও পুলিশ সমন্বয়ে আমাকে রাতের অন্ধকারে পিটিয়ে রাস্তায় মেরে ফেলছিলো ঠিক সেই সময় শফিক ভাইয়েরই এক ঘনিষ্ট সাংবাদিক এই আধো অন্ধকারে আমাকে চিনতে পেরে চিৎকার দিয়ে ২/৪জন সাংবাদিক জড়ো করে এবং তখনই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যে আমাকে পুলিশ লাশ মনে করে ফেলে চলে যায়। আর তারাই/ সাংবাদিকরাই একজন আমার সহকর্মীকে দিয়ে হাসপাতালে পাঠায়।
তারপরের দিনই তিনি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীরের কাছ থেকে জানতে পারেন আমি কোন হাসপাতালে যেখানে লুকিয়ে চিকিৎসা করছিলাম ,সাথে ছিলেন এডভোকেট আসাদ ভাইও ।উনাকে দেখে আমার মধ্যে ঐ সময় মনে হয়েছিলো শফিক ভাই শুধু কলমের সৈনিক না রাজপথেরও বটে। তাইতো তিনি রাজনীতির উচ্চাকাঙখা না থাকা স্বত্ত্বেও যে বাতি জালিয়ে দিয়েছেন- সেখান থেকে এখন শুধু আলোই জ¦লছে -রাজনীতির এই উদ্যানে ।তার কয়েকদিন পরেই দেখতে পেলাম শফিক ভাই আমাকে শিরোনাম করে উনার মৌচাক ডিল পত্রিকায় প্রচ্ছদে বিশাল ছবি দিয়ে কাভার করেছেন । আমি তখন যে সুখ অনুভব করলাম যা বলে বুঝাতে পারবো না কভু – যদিও মৌচাকে ঢিল প্রকাশের আগের দিন রাতেও তার সাথে ফোনে কথা হচ্ছিলো কিন্তু উনি আমাকে কিছুই জানাননি যে উনার পত্রিকায় আমি শীষ সংবাদ – যেখানে আমি প্রচ্ছদের মূলে । দেশের এতো বড় বরেন্য ব্যক্তির কলমে আমার বিষয়ে লিখা যেনো পৃথিবীর সর্বোচ্চ প্রাপ্য তিনি শুধু এতোটুকু বললেন তুমি সুষ্হ হও তোমাকে বাংলাভিশনের আমার লালগোপাল অনুষ্ঠানে অতিথি করে তোমার রাজনীতি ও ভালোবাসা একই সাথে শুনবো-আমি যদিও তার সেই ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন ডে আসার আগেই সুস্ষ হয়ে তার অনুষ্ঠানে হাজির হলাম আর ভাবলাম এই সেই ব্যক্তি যিনি এদেশে ভালোবাসা দিবস ও বিপ্লব এক সাথে উপস্থাপন করেছে জাতীর সামনে- লাল গোলাপে যে এতো কাঁটা জানতাম আগে তবে অনুভব করলাম শফিক ভাইকে দেখে-লালের বিপ্লবী ভাবে, গোলাপের গন্ধে আর কাঁটার আঘাতে আজো বেঁচে থাকার এক ভিন্ন/ব্যতিক্রম দর্শনের মানুষ শফিক ভাইয়ের জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা- এই লিখায় যা লিখলাম সবই আমি একজন ব্যক্তি থেকে আমার প্রাপ্তির বিষয় লিখলাম কিন্তু আমি কখনো উনার জন্য কিছু করতে পেড়েছি তার কোনো একটি উদাহরণও আমার কাছে নেই । রাজনীতিতে উনি আমার নেতা না হয়েও তিনি এদেশের অনেক নেতাদের নেতা – আমরা উনাকে লেখক , সাংবাদিক , উপসহাপক হিসেবেই চিনেছি কিন্তু নেতা বানানোর যে কারখানা উনি গড়ে গেছেন তা ভবিষ্যত বলে দিবে শফিক রেহমানের নতুন এক স্বত্ত্বার গল্প ।
( লেখক- সমাজকর্ম গবেষক ও রাজনীতি কর্মী )